Summary
Android এর বিবর্তন: Android বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। গুগলের মালিকানাধীন এই অপারেটিং সিস্টেমটি ২০০৩ সালে Android Inc. প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শুরু হয়। ২০০৫ সালে গুগল এই প্রতিষ্ঠানটি অধিগ্রহণ করে।
অ্যান্ড্রয়েডের সূচনা: প্রাথমিকভাবে ক্যামেরার জন্য একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরির উদ্দেশ্য ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে মোবাইল ডিভাইসের জন্য উন্নতির দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়।
প্রথম রিলিজ এবং জনপ্রিয়তা: ২০০৮ সালে প্রথম Android ফোন HTC Dream/LG T-Mobile G1 উন্মোচিত হয়। পরবর্তী বছরের Android 1.5 Cupcake নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করে।
পরবর্তী সংস্করণ:
- Android 2.0/2.1 Eclair (২০০৯): Google Maps Navigation এবং HTML5 সমর্থন।
- Android 2.2 Froyo (২০১০): নতুন ফিচার এবং উন্নত পারফরম্যান্স।
- Android 2.3 Gingerbread (২০১০): UI ও পাওয়ার ম্যানেজমেন্টে উন্নতি।
- Android 3.0 Honeycomb (২০১১): ট্যাবলেটের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন।
- Android 4.0 Ice Cream Sandwich (২০১১): ফোন এবং ট্যাবলেটের জন্য অভিন্ন ইন্টারফেস।
- Android 4.4 KitKat (২০১৩): নতুন ইন্টারফেস এবং Google Now ইন্টিগ্রেশন।
- Android 5.0 Lollipop (২০১৪): Material Design ইন্টেরফেস।
- Android 6.0 Marshmallow (২০১৫): Doze mode এবং উন্নত পারমিশন নিয়ন্ত্রণ।
- Android 7.0 Nougat (২০১৬): Split-screen mode।
- Android 8.0 Oreo (২০১৭): Picture-in-picture mode।
- Android 9 Pie (২০১৮): Digital Wellbeing এবং নতুন Gesture Navigation।
- Android 10 (২০১৯): ডার্ক মোড এবং উন্নত প্রাইভেসি।
- Android 11 (২০২০): Bubbles এবং Screen Recording।
- Android 12 (২০২১): Material You ডিজাইন সিস্টেম।
ভবিষ্যৎ: গুগল প্রতিবার নতুন সংস্করণ উন্মোচন করে, যা উন্নত AI, 5G সমর্থন এবং IoT ডিভাইসের সাথে কার্যকরী ইন্টিগ্রেশন নিয়ে আসে। Android এর ভবিষ্যৎ আত্মবিশ্বাসী এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নতির পথে।
Android আজকের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমগুলির মধ্যে অন্যতম। এর উদ্ভাবন থেকে শুরু করে আজকের অবস্থানে পৌঁছানো পর্যন্ত এর বিকাশের একটি দীর্ঘ এবং সফল যাত্রা রয়েছে। গুগলের মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্মটি শুরুতে ছোট একটি প্রকল্প ছিল, যা পরবর্তীতে মোবাইল ইন্ডাস্ট্রির রূপ পাল্টে দেয়।
Android এর সূচনা এবং প্রাথমিক বছর:
2003 সালে Android Inc. প্রতিষ্ঠা: অ্যান্ড্রয়েডের সূচনা হয় ২০০৩ সালে, যখন অ্যান্ডি রুবিন, রিচ মাইনার, নিক সিয়ার্স এবং ক্রিস হোয়াইট মিলে Android Inc. নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্যামেরার জন্য একটি উন্নত অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা। তবে, তারা শীঘ্রই লক্ষ্য করেন যে, মোবাইল ডিভাইসের জন্য একটি উন্নত অপারেটিং সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং সেই দিকে মনোযোগ দেন।
2005 সালে গুগলের অধিগ্রহণ: ২০০৫ সালে গুগল, Android Inc. অধিগ্রহণ করে এবং অ্যান্ডি রুবিন সহ প্রতিষ্ঠাতাদেরকে গুগলের অধীনে কাজ করতে নিয়ে আসে। গুগলের অধীনে Android মোবাইল ফোনের জন্য একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে গড়ে উঠতে থাকে।
Android এর ওপেন সোর্স প্রকৃতি: অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল এর ওপেন সোর্স প্রকৃতি। গুগল চেয়েছিল একটি ফ্লেক্সিবল অপারেটিং সিস্টেম যা বিভিন্ন ডিভাইস নির্মাতাদের দ্বারা কাস্টমাইজ করা যেতে পারে। এজন্য গুগল Android Open Source Project (AOSP) এর মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েডের সোর্স কোড উন্মুক্ত করে দেয়।
Android এর প্রথম রিলিজ এবং জনপ্রিয়তা:
2008 সালে প্রথম অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস: ২০০৮ সালে, প্রথম Android চালিত স্মার্টফোন HTC Dream বাজারে আসে, যা বিভিন্ন দেশে T-Mobile G1 নামে পরিচিত ছিল। এটি Android 1.0 সংস্করণে চালিত ছিল এবং এতে ছিল একটি ফিজিক্যাল কীবোর্ড, টাচস্ক্রিন, এবং অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য Android Market (বর্তমান Google Play Store)।
Android 1.5 Cupcake: ২০০৯ সালে Android 1.5 Cupcake রিলিজ করা হয়, যা প্রথমবারের মতো ভিজুয়াল কাস্টমাইজেশন এবং থার্ড-পার্টি উইজেট যুক্ত করে। এটি ইউজারদের জন্য অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে আরও নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।
Android এর ধারাবাহিক উন্নয়ন এবং জনপ্রিয়তা:
Android দ্রুত বিকাশ লাভ করতে থাকে এবং প্রতি বছর নতুন ফিচার এবং উন্নত সংস্করণ প্রকাশিত হয়। কিছু উল্লেখযোগ্য সংস্করণ হল:
Android 2.0/2.1 Eclair (২০০৯): এটি Android এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপডেটগুলির একটি ছিল, যা Google Maps Navigation এবং HTML5 সাপোর্ট নিয়ে আসে।
Android 2.2 Froyo (২০১০): এই সংস্করণে ফ্রস্ট-এনক্রিপ্টেড অ্যাপ্লিকেশন এবং ফ্ল্যাশ প্লেয়ার সমর্থন যুক্ত করা হয়। এটি আরও দ্রুত পারফরম্যান্সের জন্য জাভা স্ক্রিপ্ট ইঞ্জিন উন্নত করে।
Android 2.3 Gingerbread (২০১০): Gingerbread সংস্করণ গেমিং, UI, এবং পাওয়ার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে বড় উন্নতি নিয়ে আসে। এটি আরো হালকা UI এবং সহজ ব্যবহার যোগ করে।
Android 3.0 Honeycomb (২০১১): Honeycomb ছিল একটি বিশেষ সংস্করণ, যা ট্যাবলেটের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এটি মোবাইল ফোনের তুলনায় বড় স্ক্রিনের জন্য অপ্টিমাইজ করা হয়েছিল।
Android 4.0 Ice Cream Sandwich (২০১১): এই সংস্করণে ফোন এবং ট্যাবলেটের জন্য অভিন্ন ইন্টারফেস আনা হয়, এবং নতুন Holo UI ডিজাইন করা হয়, যা ব্যবহারকারীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়।
Android এর আধুনিক যুগ:
Android 4.4 KitKat (২০১৩): KitKat একটি বড় উন্নতি নিয়ে আসে, যা কম মেমোরি থাকা ডিভাইসগুলিতেও ভালো পারফরম্যান্স দেয়। এটি একটি নতুন ইন্টারফেস ডিজাইন করে এবং Google Now ইন্টিগ্রেশন করে।
Android 5.0 Lollipop (২০১৪): এটি Material Design ইন্টারফেস নিয়ে আসে, যা গুগলের ডিজাইন ভাষার জন্য একটি বড় পরিবর্তন ছিল। এতে প্রথমবারের মতো ART (Android Runtime) যুক্ত করা হয়, যা পারফরম্যান্সের উন্নতি করে।
Android 6.0 Marshmallow (২০১৫): এই সংস্করণে Doze mode নামে একটি ফিচার যুক্ত হয়, যা ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফ বাড়ায়। এটির মাধ্যমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার এবং অ্যাপ পারমিশনের নিয়ন্ত্রণ যোগ করা হয়।
Android 7.0 Nougat (২০১৬): Nougat এ Split-screen mode এবং Notification Direct Reply এর মতো ফিচার যুক্ত করা হয়।
Android 8.0 Oreo (২০১৭): Oreo এ Picture-in-picture mode, Notification Dots, এবং Autofill API যুক্ত করা হয়। এটি আরও স্মার্ট এবং নিরাপদ ব্যবস্থাপনা আনে।
Android 9 Pie (২০১৮): Pie এ Digital Wellbeing এবং Adaptive Battery এর মতো ফিচার নিয়ে আসে, যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে। এতে নতুন Gesture Navigation যোগ করা হয়।
Android 10 (২০১৯): গুগল এই সংস্করণ থেকে মিষ্টির নাম ব্যবহার বন্ধ করে। এতে ডার্ক মোড, উন্নত প্রাইভেসি সেটিংস, এবং স্মার্ট রিপ্লাইয়ের মতো ফিচার অন্তর্ভুক্ত হয়।
Android 11 (২০২০): Android 11 এ Bubbles, Screen Recording, এবং আরও শক্তিশালী প্রাইভেসি কন্ট্রোল আনা হয়।
Android 12 (২০২১): Android 12 এর বড় বৈশিষ্ট্য ছিল Material You ডিজাইন সিস্টেম, যা ব্যবহারকারীদের পছন্দ অনুযায়ী UI কাস্টমাইজ করার সুযোগ দেয়। এটি নতুন প্রাইভেসি ড্যাশবোর্ড এবং আরও অনেক নতুন ফিচার নিয়ে আসে।
সংক্ষেপে Android এর ভার্সনসমূহ:
অ্যান্ড্রয়েড বিভিন্ন নামে এবং সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। কিছু উল্লেখযোগ্য সংস্করণ হল:
- Cupcake (1.5)
- Donut (1.6)
- Eclair (2.0-2.1)
- Froyo (2.2)
- Gingerbread (2.3)
- Honeycomb (3.0-3.2)
- Ice Cream Sandwich (4.0)
- Jelly Bean (4.1-4.3)
- KitKat (4.4)
- Lollipop (5.0-5.1)
- Marshmallow (6.0)
- Nougat (7.0-7.1)
- Oreo (8.0-8.1)
- Pie (9.0)
- Android 10
- Android 11
- Android 12
- Android 13 ইত্যাদি।
Android এর বর্তমান এবং ভবিষ্যত:
গুগল প্রতি বছর অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণ প্রকাশ করে চলেছে। Android 13 এবং পরবর্তী সংস্করণগুলো আরো স্মার্ট এবং উন্নত ফিচার নিয়ে আসছে, যেমন উন্নত AI ইন্টিগ্রেশন, 5G সমর্থন, এবং IoT (Internet of Things) ডিভাইসের সাথে আরও কার্যকরী ইন্টিগ্রেশন।
Android এর ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, এবং এই প্ল্যাটফর্মটি প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমাগত উন্নত হতে থাকবে।
Read more